Source: cplusbd.net
এম, আবদুল মন্নান, সংযুক্ত আরব আমিরাত: সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রবাসীদের শতকরা ৬০ ভাগ চট্টগ্রামের। আবুধাবী থেকে সরাসরি চট্টগ্রামে যাওয়ার মাধ্যম বাংলাদেশ বিমান। সপ্তাহে ৪টি ৭৩৭ ছোট ফ্লাইট চট্টগ্রাম বিমান বন্দরে গেলেও যা পর্যাপ্ত পরিমান যাত্রী বহন করতে অক্ষম। আগে চট্টগ্রামে যে ৭৭৭ ফ্লাইট যেত তার ধারণ ক্ষমতা ছিল ৪২০ জন। গত ৩ মাস ধরে যে ফ্লাইট দিয়েছে তার ধারণ ক্ষমতা ১৬৫ জন।, কিন্তু অনেক সময় দেখা যায় ১৩০ জনের অধিক যাত্রী বহণ করতে অক্ষম ৭৩৭ ফ্লাইটগুলো। একজন প্রবাসী মারা গেলে তাদের মৃতদেহ বহন করতে অপরগতা প্রকাশ করেছেন বিমান কতৃপক্ষ। ফলে মাসের পর মাস মৃত দেহ আমিরাতের হাসপাতাল মর্গে পড়ে থাকায় আইনি জড়িলতা সৃষ্টি হচ্ছে। এখানকার ট্রাভেল মালিকদের দাবী বিমানে লোকসান দিয়ে সরকারকে বেকাদায় ফেলার জন্য এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্তা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বড় ফ্লাইটগুলো ছাত্রীবিহীন ঢাকা ও সিলেটে পাঠাচ্ছে।
দেশের ২য় শ্রম বাজার নামে খ্যাত সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবী থেকে চট্টগ্রামের সরাসরি যাওয়ার এক মাত্র ভরসা বাংলাদেশ বিমান। এই রোডে ছোট ফ্লাইট দিয়ে অযথা যাত্রীদের হয়রানী করা হচ্ছে। অন্যান্য বিমানের ফ্লাইট থেকেও ভাড়া দিয়ে কাংখিত সুফল পাচ্ছেন না প্রবাসীরা।
অনেক প্রবাসী লাশ বহন করতে না পারায় ক্ষুদ্ধ। রাঙ্গুনিয়া সরফভাটা প্রবাসী জমির হোসেন বলেন, ইউনিয়নের চুন্নু মিয়ার ছেলে আবুধাবী প্রবাসী মোহাম্মদ লোকমান দেশটিতে মারা গেলে তার লাশ বিগত ২০ দিন ধরে স্থানীয় হাসপাতালে পড়ে ছিল। সরকারের নির্দেশনা থাকার পরও বিমান কর্তৃপক্ষ দেশে লাশ পাঠাতে গড়িমসি করে আসছে।
আবুধাবী আল-নুর ট্রাভেলসের পরিচালক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন এ প্রতিবেদককে জানান, বর্তমান সরকার প্রবাসীদের জন্য নানা প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রবাসীদের সোনার ছেলে আখ্যা দিয়ে তাদের লাশ ফ্রি দেশে নিয়ে যাওয়ায় জন্য ঘোষণা দিয়েছিলেন।কিন্তু বর্তমান সরকারের অর্জনকে ম্লান করার জন্য এক শ্রেনির বিমানের কর্মকর্তারা কাজ করছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ট্রাভেলস মালিক বলেন, সরকারের ইমেজ নষ্ট করে নিজের পকেট ভারী করতে বিমানের একশ্রেনীর অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজেশে ছোট ফ্লাইট চট্টগ্রামে দিয়ে যাত্রী বিহীন বড় ফ্রাইটগুলো দিয়ে সিলেটে কার্গোর মালামাল পরিবহন করছে। ফলে বাড়ছে নানা জটিলতা।
আবুধাবীর কয়েকজন প্রবাসী কমিনিউটি নেতার দাবী বিমানের আরব আমিরাত কান্ট্রী ম্যানেজার দাওয়াত খাওয়াতে ও পার্টিতে ব্যস্ত থাকেন সব সময়। তিনি দেশের জাতীয় দিবসগুলো পালন করতে অক্ষম। তিনি কি করে বিমানের উন্নয়নে কাজ করবেন তা নিয়ে প্রবাসীদের মনে নানা প্রশ্নের দানা বাধঁতে শুরু করেছে।
নুর হোসেন, মোহাম্মদ জাকের, হাবীবুল্লাহ প্রমুখ প্রবাসীরা এ প্রতিবেদকের কাছে অভিযোগ করে বলেন, আমরা সীট চাইলে বলে বিমানের কোন সীট নেই। কোন মতে টাকা বৃদ্ধি করে দিলে সীট মিলে। আর বিমানে চড়লে দেখা যায় বিমানের অনেক সীট খালী।
বিমান বাংলাদেশের আরব আমিরাত কান্ট্রি ম্যানাজার ইকবাল আহমেদ চৌধুরীর কাছে বিমানের বিরুদ্ধে প্রবাসীদের আনীত আভিযোগের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলে মিডিয়ার সামনে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করে বলেন, এখন চট্টগ্রামে যে ছোট বিমান ৭৩৭ যাচ্ছে তাতে লাশ বহন করা সম্ভব নয়।
যেখানে প্রবাসীদের লাশ ফ্রি নিয়ে যাওয়ার কথা বিমান সেখানে নানা জটিলতা সৃষ্টিতে দুর্ভোগ বাড়ছে রেমিটেন্স সৈনিকদের। চট্টগ্রামের প্রবাসীদের লাশ ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়ি নিতে বিমান ভাড়াসহ অধিক খরচ গুণতে হয় পরিবারকে। সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে প্রবাসীদের একটাই দাবী যাতে প্রবাসীদের লাশ আবুধাবী হতে সহজে চট্টগ্রামে নেয়া যায় আর তা দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণে এগিয়ে আসবে প্রবাস বান্ধব এ সরকার।
© 2022 BASUG | Website developed by TriConsulting.nl